হেমেন্দ্রকুমার রায় সাহিত্যিক এবং গীতিকার। তিনি ছোটদের জন্য রহস্য রোমাঞ্চ ও গোয়েন্দা গল্প লেখার জন্য বিখ্যাত । হেমেন্দ্রকুমার রায়ের জন্মস্থান কলকাতা। তাঁর পিতার নাম রাধিকাপ্রসাদ।
হেমেন্দ্রকুমার রায় মাত্র চোদ্দো বছর বয়সে সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে বসুধা পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প ‘আমার কাহিনী’ প্রকাশিত হয়। ১৩২২ বঙ্গাব্দে সৌরীন্দ্রমোহন মুখোপাধ্যায় এবং মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্পাদনায় ভারতী পত্রিকা নতুন রূপে প্রকাশিত হলে হেমেন্দ্রকুমার এর লেখকগোষ্ঠীতে যোগদান করেন । সাপ্তাহিক নাচঘর পত্রিকাটি তিনি সম্পাদনা করেছিলেন। এ ছাড়া মাসিকপত্র রংমশাল প্রভৃতি কয়েকটি পত্রিকার সম্পাদনার সাথেও তিনি যুক্ত ছিলেন।
ছোটদের জন্য তিনি ৮০টিরও বেশি বই লিখেছিলেন। এর মধ্যে কবিতা, নাটক, হাসি ও ভূতের গল্প, অ্যাডভেঞ্চার, ও গোয়েন্দা কাহিনী, ঐতিহাসিক উপন্যাস সব কিছুই ছিল। তাঁর সৃষ্ট বিমল-কুমার, জয়ন্ত-মানিক, পুলিশ ইন্সপেক্টর সুন্দরবাবু বাংলা কিশোর সাহিত্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য চরিত্র ।
হেমেন্দ্রকুমার রায় বড়দের জন্যও বেশ কিছু বই লিখেছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: জলের আলপনা, বেনোজল, পদ্মকাঁটা, ঝড়ের যাত্রী, যাঁদের দেখেছি, বাংলা রঙ্গালয় ও শিশিরকুমার, ওমর খৈয়ামের রুবায়ত প্রভৃতি । তাঁর সিঁদুর চুপড়ি গল্পটি জার্মান ভাষায় অনুদিত হয়ে একটি সঙ্কলন গ্রন্থে স্থান পেয়েছিল। তিনি সফল গীতিকারও ছিলেন। সেই সময়ের বাংলা থিয়েটার এবং গ্রামাফোনে গাওয়া গানের প্রচলিত রীতি এবং রুচির মোড় তিনি ফিরিয়েছিলেন। তাঁর রচিত অনেক গান সেই সময়ে জনপ্রিয় ছিল। ‘অন্ধকারের অন্তরেতে’ গানটি এর মধ্যে অন্যতম ।
তিনি শিশিরকুমার ভাদুড়ীর সীতা নাটকের নৃত্য পরিচালক ছিলেন। তিনি ভালো ছবি আঁকতে পারতেন। বাংলায় শিল্প সমালোচনার তিনি অন্যতম পথিকৃৎ।
সব মিলিয়ে বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন হেমেন্দ্রকুমার। শিল্পের সবকটি শাখাতেই তার ছিল অবাধ গতায়াত। জীবনকালে যেমন সম্মান ও শ্রদ্ধা পেয়েছেন। তেমনি মৃত্যুর পরেও বাঙালি সাহিত্য পাঠাক তাঁকে হৃদয়ে স্থান দিয়েছে। কিন্তু তাঁর শিল্পী সত্তার সব দিকগুলি হয়তো যথাযগ্য চর্চার দাবি রাখে।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
অ্যাপটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের মতামত জানাতে ভুলবেন না।