এপ আপডেট করা হয়েছে এবং নতুন কন্টেন্ট যুক্ত করা হয়েছে
মনমোহন সিংহ জন্ম ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ ভারতীয় গণতন্ত্রের বর্তমান এবং ১৪ তম প্রধানমন্ত্রী। ইনিই প্রথম শিখ ধর্মাবলম্বী প্রধানমন্ত্রী। পেশায় শ্রী সিংহ একজন অর্থনীতিবিদ। তিনি ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতীয় রিসার্ভ ব্যাঙ্কের প্রশাসক, ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারতের যোজনা কমিশনের সহ অধ্যক্ষ এবং ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ভারতের অর্থ মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বর্তমানে চতুর্থ বারের জন্য অসম থেকে একজন রাজ্য সভা সদস্য হিসাবেও মনোনীত হন।
শ্রী সিংহ পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্নাতক। ভারতীয় রিসার্ভ ব্যাঙ্কের প্রশাসক হিসাবে, ভারতীয় যোজনা কমিশনের সহ সভাপতি হিসাবে কার্যভার পালনের পর ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী নরসিমহা রাও এর মন্ত্রীসভায় অর্থমন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত। অর্থমন্ত্রী হিসাবে কার্যকালে ১৯৯১ সালে ভারতীয় অর্থনীতির পুনর্গঠনের ফলস্বরূপ লাইসেন্স রাজ প্রথার অবলুপ্তির ক্ষেত্রে তাঁর অবদান বিশেষভাবে প্রসংশিত হন। ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর অপ্রত্যাশিত ভাবেই শ্রী সিংহ ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ এলায়েন্স UPA জোটের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে মনোনীত হন।
২২ মে ২০০৪ সালে তিনি প্রথম মনমোহন সিংহ মন্ত্রীসভার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। শ্রী সিংহের মন্ত্রীসভা প্রথম পাঁচ বছর সরকারি অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা দূরীকরণ, দরিদ্র চাষীদের ঋণ মুক্তি এবং শিল্প মুখী অর্থনীতি ও কর নীতির প্রতি বিশেষ গুরুত্য আরোপ করেছিলো। ২০০৯ সালে সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জয়লাভের পর ২২ মে ২০০৯ শ্রী সিংহ ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুনর্নির্বাচিত হন এবং তিনিই জওহরলাল নেহরুর পর প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি পুরো পাঁচ বছর কার্যভার সম্পাদনের পর পুনরায় নির্বাচিত হন।
শৈশব ও শিক্ষা
মনমোহন সিংহ পঞ্জাবের গাহ অধুনা পাকিস্তানের চকওয়াল জেলা তে 1932 সালের 26 সেপ্টেম্বর এক শিখ পরিবারে পিতা গুরুমুখ সিংহ ও মাতা অমৃত কৌর এর সন্তান রূপে জন্মগ্রহণ করেন. শৈশবেই তিনি তাঁর মাকে হারান এবং তাঁকে মানুষ করেন তাঁর পিতামহী যাঁর কাছে তিনি খুবই আদরের ছিলেন.তিনি খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন, যেহেতু তাঁদের গ্রামে বিদ্যুতের ব্যবস্থা ছিলনা তাই তাঁকে লন্ঠনের আলয়ে লেখা পড়া শিখতে হয়েছিল.ভারত ভাগের পর তিনি অমৃতসরে চলে আসেন.শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করেছেন ও 1952 এবং 1954 সালে চন্ডিগড়ের পঞ্জাব বিস্ববিদ্যাল্যায় থেকে অর্থনীতিতে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী পান. অর্থনীতিতে সন্মানিক স্নাতক ডিগ্রীর লাভের জন্য তিনি সেন্ট জন্স মহাবিদ্যালয়ের একজন সদস্য হিসাবে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে যান. অক্সব্রিজ এর ঐতিহ্য অনুযাই একজন সন্মানিক স্নাতক ডিগ্রী ধারী পরে মাস্টার ডিগ্রী লাভের অধিকারী হন বৈশিষ্টপূর্ণ ফলাফলের জন্য 1955 ও 1957 সালে তিনি রাইটস পুরস্কার অর্জন করেন.মুষ্ঠিমেয় কয়েকজন র্বেন্বারী ছাত্রবৃত্তি প্রাপকদের মধ্যে তিনিও একজন ছিলেন. নযুফিল্ড মহাবিদ্যালাযায়ের ছাত্র হিসাবে তিনি 1962 সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে DPhilডিগ্রী অর্জন করেন. তাঁর গবেষণা পত্রের বিষয় ছিল 1951 থেকে 1960 এই সময় কালে রপ্তানি বানিজ্যে ভারতের ভূমিকা, রপ্তানি বানিজ্যের ভবিষ্যত ও নীতির বৈশিষ্ট সমূহ এবং গবেষনা পত্রের পরিদর্শক ছিলেন ডক্টর আই এম ডি লিটল.এই গবেষণা পত্রের ভিত্তিতেই তিনি ইন্দিযাস এক্সপোর্ট ট্রেন্ডস এন্ড প্রসপেক্টস ফর সেল্ফ সাস্তেন্দ গ্রোথ নামে একটি পুস্তক রচনা করেন. 1997 সালে আলবার্তো বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে আইন বিষয়ে সান্মানিক ডক্তর্স উপাধী প্রদান করে. 2006 সালের জুন মাসে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সন্মানিক Doctor of Civil Lawসাধারণ আইনের বিষয় ডক্তর্স উপাধী প্রদান করে ও সেই বছরেই অক্টোবর মাসে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে একই উপাধিতে ভূষিত করে.তাঁর সম্মানার্থে সেন্ট জোনস বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর নামে, ডক্টর মনমোহন সিংহ স্কলারশিপ এই নামে একটি PhD ছাত্রবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা করে.
প্রাথমিক কর্মজীবন
তিনি D.Phil এর পড়াশোনা শেষ করার পর ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৯ পর্যন্ত UNCTAD এর হয়ে কাজ করেন। ৭০ এর দশকে তিনি দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং ভারত সরকারের অর্থ ও বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবে ছিলেন। ১৯৮২ সালে তিনি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর হিসাবে নিযুক্ত হন এবং এই পদে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত আসীন ছিলেন। তিনি ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত ভারতীয় যোজনা আয়োগ সহ সভাপতি ছিলেন।