জসিম উদ্দিন সমগ্র

Arefin Khaled

জসিম উদ্দিন সমগ্র

کتاب‌ها و منابع
  • 0.00
(0 رای)

نصب رایگان

1000

نصب ها

Android 5.0+

نسخه حداقل

با تبلیغات

تبلیغات

22.07.2021

تاریخ انتشار

توضیحات:

জসীমউদ্দীন কবি, শিক্ষাবিদ। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে মাতুলালয়ে তাঁর জন্ম। পৈতৃক নিবাস একই জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। পিতা আনসারউদ্দীন মোল্লা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। শৈশবে ফরিদপুর হিতৈষী স্কুলে জসীমউদ্দীনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়। তারপর ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (১৯২১), রাজেন্দ্র কলেজ থেকে আই.এ (১৯২৪) ও বি.এ (১৯২৯) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তিনি এম.এ (১৯৩১) পাস করেন।

জসীমউদ্দীনের কর্মজীবন শুরু হয় পল্লিসাহিত্যের সংগ্রাহক হিসেবে। স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে দীনেশচন্দ্র সেনের আনুকূল্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক এ কাজে তিনি নিযুক্ত হন। এমএ পাস করার পর থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত তিনি উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে দীনেশচন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী ছিলেন। ১৯৩৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন। এখানে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত চাকরি করার পর ১৯৪৪ সাল থেকে তিনি প্রথমে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকার এবং পরে পূর্ব পাকিস্তান সরকারের প্রচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে এখান থেকে ডেপুটি ডাইরেক্টর হিসেবে অবসর গ্রহণ করে তিনি ঢাকার কমলাপুরে নিজ বাড়িতে স্থায়িভাবে বসবাস করেন।

জসীমউদ্দীনের কবিত্ব শক্তির প্রকাশ ঘটে ছাত্রজীবনেই। তখন থেকেই তিনি তাঁর কবিতায় পল্লিপ্রকৃতি ও পল্লিজীবনের সহজ-সুন্দর রূপটি তুলে ধরেন। পল্লির মাটি ও মানুষের সঙ্গে তাঁর অস্তিত্ব যেন মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছিল।

কলেজজীবনে ‘কবর’ কবিতা রচনা করে তিনি বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তাঁর এ কবিতাটি প্রবেশিকা বাংলা সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়। কবি হিসেবে এটি তাঁর এক অসামান্য সাফল্য।

জসীমউদ্দীন সাহিত্যের নানা শাখায় কাজ করেছেন, যেমন গাথাকাব্য, খন্ডকাব্য, নাটক, স্মৃতিকথা, শিশুসাহিত্য, গল্প-উপন্যাস ইত্যাদি। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ রাখালী প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে। তাঁর প্রধান গ্রন্থগুলি হলো: নক্সী কাঁথার মাঠ (১৯২৯), সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩), রঙিলা নায়ের মাঝি (১৯৩৫), মাটির কান্না (১৯৫১), সুচয়নী (১৯৬১), পদ্মা নদীর দেশে (১৯৬৯), ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে (১৯৭২), পদ্মাপার (১৯৫০), বেদের মেয়ে (১৯৫১), পল্লীবধূ (১৯৫৬), গ্রামের মায়া (১৯৫৯), ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় (১৯৬১), জার্মানীর শহরে বন্দরে (১৯৭৫), স্মরণের সরণী বাহি (১৯৭৮), বাঙালীর হাসির গল্প, ডালিম কুমার ইত্যাদি। তাঁর রচিত বাঙ্গালীর হাসির গল্প (দুই খন্ড, ১৯৬০ ও ১৯৬৪) ও বোবা কাহিনী (১৯৬৪) উপন্যাসটি সুখপাঠ্য।

জসীমউদ্দীন জারীগান (১৯৬৮) ও মুর্শীদা গান (১৯৭৭) নামে লোকসঙ্গীতের দুখানি গ্রন্থ সংকলন ও সম্পাদনা করেন। ১৯৬৮ সালে তাঁর সম্পাদনায় কেন্দ্রীয় বাঙলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয় জারীগান। জারি গান একান্তভাবেই বাংলাদেশের নিজস্ব সৃষ্টি। এ গ্রন্থে জারি গানের মোট ২৩টি পালা সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থের ভূমিকায় জসীমউদ্দীন জারি গানের উৎস এবং বিভিন্ন এলাকার জারি গানের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। দ্বিতীয় গ্রন্থটি তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়।

তাঁর নক্সী কাঁথার মাঠ কাব্যটি দি ফিল্ড অব এমব্রয়ডার্ড কুইল্ট এবং বাঙালীর হাসির গল্প গ্রন্থটি ফোক টেল্স অব ইষ্ট পাকিস্তান নামে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। বাংলা কবিতার ধারায় জসীমউদ্দীনের স্থানটি বিশিষ্ট। তাঁর কবিতা অনাড়ম্বর কিন্তু রূপময়। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজীবন জসীমউদ্দীনের কবিতায় নতুন রূপ লাভ করেছে। বাংলাদেশের মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসিকান্না ও জীবন সংগ্রামের কাহিনীই তাঁর কবিতার প্রধান উপজীব্য। তাঁর কবিতায় দেশের মাটির সাক্ষাৎ উপলব্ধি ঘটে। এজন্য ‘পল্লীকবি’ হিসেবে তাঁর বিশেষ ও স্বতন্ত্র পরিচিতি রয়েছে। তাঁর গদ্য রচনাও বিশেষ আকর্ষণীয়; সরল, সরস, গভীর ও আন্তরিকতার স্পর্শে তা মন ছুঁয়ে যায়।

জসীমউদ্দীন ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং এ ধরণের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা। এরূপ মানসিকতার কারণেই ষাটের দশকে পাকিস্তান সরকার রেডিও ও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত প্রচার বন্ধের উদ্যোগ নিলে অনেকের মতো তিনিও এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলন (১৯৬৬-১৯৭১) এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক ছিলেন।

জসীমউদ্দীন বাংলা সাহিত্যের একজন বিশেষ সম্মানিত ও বহু পুরস্কারে পুরস্কৃত কবি। তিনি প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার ডিগ্রি, বাংলাদেশ সরকারের একুশে পদক ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে (মরণোত্তর) ভূষিত হন। তিনি ১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন, কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭৬ সালের ১৩ মার্চ তিনি ঢাকায় মারা যান।

- বিমল গুহ

Arefin Khaled برنامه های دیگر

دانلود